স্টাফ রিপোর্টার
নড়াইলের কালিয়া উপজেলার পেড়লী ইউনিয়নের খড়রিয়া গ্রামের জোবায়ের বিশ্বাসের ইটভাটা সংলগ্ন চিত্রা নদীতে ধরা পড়েছে বিরল প্রজাতির সেই কুমির। এর আগে গত অক্টোবরে চিত্রা নদীতে কুমির ভাসতে দেখেন এলাকাবাসী। এনিয়ে ১৬ অক্টোবর দৈনিক যুগান্তরে নড়াইলে চিত্রা নদীতে কুমির,জনমনে আতঙ্ক শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। অবশেষে সোমবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে ইটভাটা সংলগ্ন চিত্রা নদীর চরে সেটিকে দেখতে পেয়ে গ্রামবাসী জাল দিয়ে আটক করে বিশাল আকৃতির এ কুমির। কুমিরটিকে জালে আটকে ডাঙায় তুলে স্থানীয় ইউপি চত্ত্বরে রাখা হয়। কুমিরটি একনজর দেখতে সেখানে শতশত উৎসুক নারী পুরুষ ও শিশু ভিড় করেন। পরে বনবিভাগে খবর দিলে সন্ধ্যায় এসে কুমিরটি নিয়ে যায়। এদিকে,কুমিরটি ধরার সময় সাতজন আহত হলেও জীবিত এবং অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
জানা গেছে, গত ১৩ অক্টোবর কুমিরটি স্থানীয়দের নজরে আসার পর চিত্রা নদীতে কুমিরের আগমনের খবরে স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক চাঞ্চল্যের পাশাপাশি আতঙ্কও তৈরি হয়। কুমিরটিকে বিরক্ত না করতে এবং অহেতুক আতঙ্কিত না হওয়ারও পরামর্শ দেওয়া হয় সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে। অনেকে সেটি দেখতে ছুটে যান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার দুপুরে জনৈক জোবায়ের বিশ্বাসের ইটভাটা সংলগ্ন নদীর পাড়ের চরে শ্রমিকরা বৃহৎ আকৃতির কুমির দেখতে পেয়ে আৎকে ওঠেন। এরপর গ্রামবাসী সবাই মিলে জাল দিয়ে ঘেরাও করে কুমিরটিকে আটক করা হয়। এসময় কুমিরের কামড়ে খড়রিয়া গ্রামের সরোয়ার বিশ্বাস (৬০),আমিনুর রহমান (৪৫),টুলু শিকদার (৩৫)সহ সাতজন জখম হয়। আহতদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়।
তারা আরও জানান,কুমিরটি প্রায় পাঁচ/সাত ফুট লম্বা হবে। চিত্রা নদীতে গত কয়েকমাস ধরে এটিকে বিভিন্ন স্থানে ভাসতে দেখা যায় । ইতিমধ্যে নদীতে পানি কমতে থাকায় এবং শীতকাল হওয়ায় রোদ পোহাতে সেটি ডাঙার দিকে চলে এসেছিল।
এ ব্যাপারে পেড়লী ইউপি চেয়ারম্যান মো.জারজিদ মোল্যা বলেন,‘সোমবার দুপুর একটার দিকে স্থানীয়রা কুমিরটি দেখতে পেয়ে অন্যদের খবর দেয়। এরপর খড়রিয়া গ্রামের আজিমুল মোল্যাসহ ১০/১২জন মিলে চারদিকে বড় জাল দিয়ে ঘেরাও করে কুমিরটিকে আটক করা হয়। এরপর সেটি ইউপি চত্ত্বরে নিয়ে আসলে আমার হেফাজতে রাখা হয়। পরে সন্ধ্যার দিকে কালিয়া উপজেলা সামাজিক বন বিভাগের সহযোগিতায় বন্যপ্রাণি সম্প্রসারণ ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের খুলনার রেঞ্জ অফিসারের নিকট সন্ধ্যার পূর্বে লিখিতভাবে হস্তান্তর করা হয়।’
কালিয়া উপজেলা সামাজিক বন বিভাগের ফরেস্টার আমজাদ হোসেন,বলেন,‘কুমিরটিকে আটক করতে পারার খবর পেয়ে বন্যপ্রাণি সম্প্রসারণ এবং প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ খুলনার রেঞ্জ অফিসার মাহিনুর রহমান এসে কুমিরটি সন্ধ্যার পূর্বে নিয়ে গেছেন। এটি মিঠাপানির বিরল প্রজাতির ঘড়িয়াল বলে মনে করছেন তারা।’
’কালিয়া থানার ওসি শেখ তাসমীম আলম বলেন,‘আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘড়িয়ালটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। এরপর কালিয়া উপজেলা সামাজিক বন বিভাগের সঙ্গে কথা বললে তারা বন্যপ্রাণী সম্প্রসারণ এবং প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের খুলনা অঞ্চলের কর্মকর্তাদের নিকট সেটি হস্তান্তর করা হয়।