স্টাফ রিপোর্টার
‘স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ের পর অবহেলা ও নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে দু’সন্তানসহ মরে যেতে চেয়েছিলাম। সন্তান দুটিকে রেখে গেলে অবহেলায় কষ্ট পাবে। তাছাড়া কার কাছে রাখবো সে কথা ভেবে তাদেরকে নিয়েই মরতে চেয়েছিলাম। ওদেরকে জুসের মধ্যে বিষ খাওয়ায়ে আমি নিজে খেয়েছিলাম। আল্লাহ আমাদের বাঁচিয়ে দেয়েছেন। এখন আর নড়াইলে থাকবো না। আবারও আমাদের ওপর নির্যাতন নেমে আসবে। তাই আমার জন্মস্থান নরসিংদী জেলায় চলে যাবো। সেখানে গিয়ে কোথাও কাজ নিবো এবং সন্তান দুটিকে লেখাপড়া শেখাবো।’ স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ের পর নির্যাতন ও ভরণপোষণ না দেয়ার কষ্টে দুটি সন্তানসহ আত্মহত্যার চেষ্টাকারী শিউলী বেগম ৪দিন মৃত্যুর সাথে লড়ার পর সুস্থ্য হয়ে দু’সন্তান নিয়ে নড়াইল সদর হাসপাতাল ছেড়ে যাবার সময় শনিবার (২১ জানুয়ারী) বিকেলে শিউলী বেগম এ কথাগুলো বলেন।
শিউলির প্রতিবেশিরা জানান, স্বামী মিঠু শেখ, প্রথম স্ত্রী শিউলি বেগম (৩২) একই বাড়িতে থাকতেন। সম্প্রতি স্বামী আরেকটি বিয়ে করায় প্রথম স্ত্রী শিউলি ও তার দুই সন্তানের ভরণপোষণ দিচ্ছিলেন না। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া-বিবাদ লেগে থাকত। এরই জের ধরে বধুবার সকাল ১০টার দিকে মিঠু স্ত্রী শিউলিকে বেদম মারধর করেন। নির্যাতনের পর দুপুরের দিকে ভওয়াখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী শিশু সন্তান রাব্বিকে (৭) স্কুল থেকে ডেকে এনে মা শিউলি বেগম তাকে এবং ছোট বোন ইলমাকে (৪) জুসের সঙ্গে বিষপান করান। পরে নিজে বিষপান করেন।
নড়াইল সদর হাসপাতালের আরএমও (ভারপ্রাপ্ত) ডাঃ সুজল কুমার বকসী জানান, চিকিৎসকদের আন্তরিক চেষ্টায় সুস্থ্য হওয়ার পর শনিবার তাদের ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোঃ মাহমুদুর রহমান বলেন, ঘটনার পর থেকে মিঠু শেখ প্রথম স্ত্রীকে নিয়ে পলাতক রয়েছে। এদিকে নড়াইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ ফখরুল হাসান জানান, শুক্রবার রাতে সদর হাসপাতালে শিউলী বেগমকে দেখতে যান এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিউলী বেগমকে ৫হাজার নগদ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আরও সাহায্যের প্রতুশ্রতি দেওয়া হয়েছে।