গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
ময়মনসিংহের গৌরীপুর-শ্যামগঞ্জ সড়কটি এলজিইডির একটি ব্যস্ততম আঞ্চলিক কার্পেটিং সড়ক। নেত্রকোণা জেলার বিভিন্ন উপজেলা ভায়া গৌরীপুর হয়ে ঈশ্বরগঞ্জ, নান্দাইল, কিশোরগঞ্জ, ভৈরব ও চট্রগ্রাম এলাকার মানুষের যোগাযোগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ প্রাচীন সড়ক এটি। প্রতিদিন দুরপাল্লার বাস, বালুবাহী ট্রাক, মাইক্রোবাস, পিকআপ, লড়ি, অটোরিকশা, মোটর সাইকেলসহ বিভিন্ন ভারী যান চলাচল করে থাকে এ সড়ক দিয়ে। অসংখ্য খানাখন্দ ও গর্তের কারনে এ বেহাল সড়কটিতে চলাচলের ক্ষেত্রে প্রায় এক বছর ধরে দুর্ঘটনার পাশাপাশি চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছিল জনসাধারণ।
এ দুর্ভোগ লাঘবে সড়কটির বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দ ও গর্ত মেরামতে সম্প্রতি ৪০ লাখ টাকা সরকারি বরাদ্ধ দেয়া হয়। এ টাকায় সড়কটির বিভিন্ন স্থানে এইচবিবি (ইটের সলিং) করা হয়েছে। রাস্তার পিচ থেকে ইটের সলিং উচু হওয়ায় ১৮ ফুট প্রস্থ ও ১০ কিঃ মিঃ দৈর্ঘ্যরে পুরো রাস্তাটি এখন স্প্রিড বেকারে পরিপূর্ণ। ফলে এ সড়কে মারাত্মক দুর্ঘটনার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অপরিকল্পিত সংস্কারে এ সড়কটিতে জনদুর্ভোগ লাঘবের পরিবর্তে বর্তমানে জনদুর্ভোগ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। এক্ষেত্রে সঠিক পরিকল্পনার অভাবে সরকারের ৪০ লাখ টাকা গচ্ছা যেতে বসেছে বলে দাবি করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
জানা গেছে, প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে প্রায় পৌনে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে এ সড়কটি নতুন করে মেরামত করা হয়। নিম্নমানের কাজ, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঠিক নজরদারির অভাব ও দু’পাশে সারিবদ্ধ পুকুরের কারনে মেরামতের কিছুদিন পর স্থানীয় শুভখাই এলাকা থেকে শ্যামগঞ্জ বাজার এলাকা পর্যন্ত প্রায় ২ কিঃ মিঃ সড়কে পিচ, সুরকী, ইট উঠে গিয়ে ছোট বড় গর্ত ও অসংখ্য খানাখন্দের সৃষ্টি হলে পুনরায় তা সংস্কার করা হয়। কয়েকমাস পর পূর্বের বেহাল অবস্থায় রূপ নেয়ায় সড়কটি দ্বিতীয় বার সংস্কারের উদ্যোগে নেন এলজিইডি কর্তৃপক্ষ। এ সংস্কারের অংশ হিসেবে বর্তমানে পিচঢালা এ সড়কে ইটের সলিং করা হয়েছে।
কয়েকজন ঠিকাদার জানান, এই সড়ক দিয়ে ধান, পাথর, বালুবাহীসহ বিভিন্ন ভারী যানবাহন চলাচল করে। এসব লোডকৃত যানবাহনের ওজন হবে প্রায় ৪০/৪৫ টন। এইচবিবি (ইটের সলিং) রাস্তার লোড ধারণক্ষমতা হচ্ছে প্রায় ১০ টন। তাই এ সড়কে ইটের সলিং ঠেকসই হবেনা বলে তাঁরা মন্তব্য করেন।
এ সড়ক দিয়ে চলাচলকারী স্থানীয় লোকজন জানান, জনগুরুত্বপূর্ণ এ পিচঢালা সড়কে ইটের সলিং করায় জনসাধারণের দুর্ভোগ আরও বাড়ছে। ইতোমধ্যে সংস্কারকৃত এ রাস্তার ইটগুলো ভেঙ্গে যাচ্ছে। খানাখন্দে ব্যবহৃত রাবিস সুরকী সড়ে গেছে। বর্ষাকালে এ সড়কটি পূর্বের চেয়ে আরও বেহাল অবস্থা হবে। তাঁরা এ ব্যস্ততম সড়কটির ঠেকসই মেরামতের জোরালো দাবি করেন।
গৌরীপুর উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী (এলজিইডি) মুহম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, এলজিইডির আরটিআইপি-২ প্রকল্পের আওতায় জনদুর্ভোগ লাঘবে জরুরী ভিত্তিতে এ সড়কটি সাময়িক সংস্কারে এইচবিবি করা হয়েছে। সড়কটির টেকসই মেরামতকল্পের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে বলে তিনি জানান।