আমি এখানে কোনো গ্রুপিং করতে আসিনি, জনগণের জন্য কাজ করতে এসেছিঃ এমপি মাশরাফী

0
9
আমি এখানে কোনো গ্রুপিং করতে আসিনি, জনগণের জন্য কাজ করতে এসেছিঃ এমপি মাশরাফী
আমি এখানে কোনো গ্রুপিং করতে আসিনি, জনগণের জন্য কাজ করতে এসেছিঃ এমপি মাশরাফী

স্টাফ রিপোর্টার

মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতার আওতাভুক্ত না হতে পারা সম্পর্কিত এক প্রশ্নের উত্তরে মাশরাফী বলেন, এমপির হাতে সব সমস্যার সমাধান নেই। মুক্তিযোদ্ধাদের বিষয়ে কিছু বলার জন্য সংশ্লিষ্ট সংসদ সদস্য বা মন্ত্রীকে ও মুক্তিযোদ্ধা হওয়া বাঞ্ছনীয়। স্বাধীনতার অনেক পরে আমার জন্ম, তারপরও আপনাদের সমস্যা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে কথা বলবো। দরকার হলে মন্ত্রী মহোদয়ের শরণাপন্ন হয়ে আপনাদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবো। বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) সন্ধায়‘জনতার মুখোমুখি জনতার সেবক’ শ্লোগানকে সামনে রেখে চতুর্থ পর্যায়ে লোহাগড়া উপজেলার ইতনা ইউনিয়নের রাধানগর বাজারে জনতার প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে লোহাগড়া পৌরসভার মেয়র সৈয়দ মসিয়ূর রহমান, ইতনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ সিয়ানুক রহমান, লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাসির উদ্দিনসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক এবং নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা আরো বলেছেন, আমি এখানে কোনো গ্রুপিং করতে আসিনি, জনগণের জন্য কাজ করতে এসেছি। আপনাদের এখানে যখন প্রথম এসেছিলাম দলমত নির্বিশেষে সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে আমাকে গ্রহণ করেছিলেন। সেটাই চাই।

মাশরাফী বলেন, আমি সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে চার বছরে কাজের হিসাব দিতে এসেছি। আমি আপনাদের জন্য কাজ করছি, আপনাদের এলাকার উন্নয়নে সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চাই। কে আপনারা, কার দল করেন, এটা আমার জানার বিষয় না। সবাই আমার কাছে সমান। মুন্সী আলাউদ্দিনের সভাপতিত্বে ‘জনতার মুখোমুখি জনতার সেবক’ অনুষ্ঠানে জনতার প্রশ্নোত্তর পর্বের আয়োজন করে ইতনা ইউনিয়ন পরিষদ।

অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্যের কাছে নদী ভাঙন, চিকিৎসা সমস্যা, রাস্তাঘাট, বাজার, খেলার মাঠ, ব্রীজ-কালভার্ট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ, ঈদগাহ সংস্কার ও নির্মাণসহ বিভিন্ন দাবি-দাওয়া পেশ করেন ইউনিয়নের বীর মুক্তিযোদ্ধা, কৃষক, ছাত্র, শিক্ষক, জনপ্রতিনিধিসহ সাধারণ জনগণ। এ সময় সংসদ সদস্য মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার জনগণের এসব দাবি নোট করেন এবং ধারাবাহিকভাবে তাদের প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর দেন।

তিনি বলেন, ইতনা ইউনিয়নে চার বছরে ১৫টি রাস্তায় খরচ হয়েছে ২৫ লাখ টাকা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান উন্নয়নে ১১ লাখ টাকা, ১১০০ মিটার রাস্তা এইচবিবিকরণ করা হয়েছে। ফকিরেরচর ঈদগাহের পাশের একটি খালের ওপর ৩৬ ফুট দৈর্ঘ্যের কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। আপদকালীন নদী তীর প্রতিরক্ষায় ডিগ্রীচর থেকে কাজীপাড়ার পৌনে দুই কিলোমিটারে খরচ হয়েছে ৩ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। ইতনা ইউনিযনের অভ্যন্তরে প্রায় ১০ কিলোমিটার খাল পুনরায় খননে ২ কোটি ৩৮ লাখ টাকা ও ধলইতলা -পাংখারচর গ্রামের দুটি সুইস গেট রেগুলেটর পুনঃর্নিমাণে ২৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। আপনাদের ইতনা ইউনিয়নে পাউবোর দরপত্রকৃত কাজের মূল্য ৫ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। আরও বেশ কিছু রাস্তার টেন্ডার হয়েছে,
যেটার কাজ দ্রুত শুরু হবে। খেলার মাঠের বরাদ্দ ও সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, খেলার মাঠের বরাদ্দগুলো সরকারিভাবে বাতিল করা হয়েছে। এই টাকাগুলো সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক ধর্মীয় স্থাপনার উন্নয়নে বরাদ্দ দিয়ে ব্যয় করা হচ্ছে। তারপরও আমার তহবিল থেকে বরাদ্দ দিয়ে মাঠের সংস্কার করবো।

মসজিদ-মন্দির সংস্কার প্রসঙ্গে মাশরাফী বলেন, আপনারা চেয়ারম্যানের মাধ্যমে একটা তালিকা করেন। তাতে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রয়োজনভেদে কাজ করে দিতে আমার সুবিধা হবে। তিনি বলেন, দায়িত্ববোধের জায়গাটা একটু আলাদা। প্রধানমন্ত্রী আমাকে নড়াইলের মনোনয়ন দিয়ে যখন পাঠিয়েছিলেন, তখন তৃণমূলের নেতাকর্মীদের ওভাবে চিনতাম না। তারপরও সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে দলকে ভালোবেসে আমার পাশে এসে সংসদ সদস্য নির্বাচিত করেছেন। সবাই সরাসরি প্রশ্ন করছে, উত্তর পাচ্ছে, নিজেরাই কাজের অপ্রগতি সম্পর্কে জানছে, যেটি আমাকে কাজগুলো সম্পর্কে ধারণা দিচ্ছে।

মাশরাফী বলেন, জনসভাগুলোতে সব সময় নেতারা কথা বলেন। কিন্তু আমার পরিকল্পনাটা একটু ভিন্ন ছিল। জনগণের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ততা। তারা যে কোনো বিষয়কে বলুক, সেটা ইতিবাচক বা নেতিবাচক যাই হোক, আমার সম্পর্কে বা কোনো ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সম্পর্কে যাই বলবে তাতে নিজেদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি কতটুকু পূরণ হলো আর কতটুকু বাকি আছে তা জানতে পারব। দুই বছর করোনা, বেশ কিছু নির্বাচন গেছে সব মিলিয়ে যতটুকু নড়াইলের উন্নয়নে করতে পেরেছি, বাকি কাজগুলোও সময়ের মধ্যে করার চেষ্টা করছি।