নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রায় পাঁচ বছর আগে ২০১৮ সালের ১৩ জুন নড়াইল জেলা ছাত্রদলের সর্বশেষ কমিটি গঠিত হয়। সময়ের ব্যবধানে বর্তমান কমিটির অনেকেই হয়ে পড়েছেন বিবাহিত ও বয়স্ক। তাইতো সামনের আন্দোলন সংগ্রামের প্রতি লক্ষ্য রেখে শুরু হয়েছে নতুন কমিটি গঠনের তোড়জোড়। জেলা ছাত্রদলের নতুন কমিটিকে কেন্দ্র করে আলোচনায় রয়েছেন অনেকেই। কমিটি ঘিরে নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সংগঠনের শীর্ষ দুই পদের জন্য ঊর্ধ্বতন মহলে তদবির চালানোর পাশাপাশি নেতাকর্মীদের নিয়ে ঘরোয়া বৈঠক, চা-চক্র, শোডাউনসহ বিভিন্ন তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন পদপ্রত্যাশীরা।
জেলা ছাত্রদলের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক দুইপদের বিপরীতে আলোচনার শীর্ষে রয়েছেন আধা ডজনের অধিক নেতা। এদের মধ্যে রয়েছেন- বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মাহমুদুল হাসান সনি, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সর্দার মেহেদী হাসান সবুজ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লিটন শেখ, স.ম রকিবুজ্জামান পাপ্পু ও রেদোয়ানুল ইসলাম নিশান, সহ-সভাপতি মামুন গাজী ও মোঃ রুমেল হোসেন কবির, সাংগঠনিক সম্পাদক রুবাইয়াৎ তুরশেদ শাথীল, ভিক্টোরিয়া কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক আরিফ হাসান, কালিয়া উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব তরিকুল ইসলাম প্রমুখ।
সভাপতি পদপ্রত্যাশীদের মধ্যে জ্যেষ্ঠ নেতা হিসেবে রয়েছেন খন্দকার মাহমুদুল হাসান সনি। তিনি বলেন, ‘‘আন্দোলনের মাঠে শক্ত অবস্থান তৈরির জন্য অভিজ্ঞ নেতৃত্ব প্রয়োজন। সে হিসাবে কেন্দ্রীয় সংসদ আমাকে যদি জেলা ছাত্রদলের সভাপতি পদে দায়িত্ব দেয়, তাহলে আমার নেতৃত্বে ছাত্রদল নড়াইলে বিএনপির রাজপথের আন্দোলনে ভ্যানগার্ডের ভূমিকায় থাকবে। এছাড়াও নড়াইল জেলা বিএনপির সভাপতি জননেতা বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলমের দিকনির্দেশনায় নিপীড়নের শিকার ও গ্রেফতার হওয়া নেতাকর্মীদের পাশে আছি এবং থাকবো।’’
আলোচনা রয়েছেন বর্তমান কমিটির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সর্দার মেহেদী হাসান সবুজ ও সাংগঠনিক সম্পাদক রুবাইয়াৎ তুরশেদ শাথীল। তারা যথাক্রমে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম ও সভাপতি বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলমের ঘনিষ্ঠ। নেতৃত্বে আসার দৌড়ে বেশ ভালোভাবেই এগিয়ে আছেন সর্দার মেহেদী হাসান সবুজ। তিনি বলেন, ‘‘অতীতে আমি ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের দ্বারা গুরুতর আহত হয়েছি। যদি এবার দলের নেতৃত্ব পাই, তাহলে জেলা ছাত্রদলে কোনো গ্রুপিং-কোন্দল রাখবো না। পাশাপাশি দলের বন্ধ অফিস খুলে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাবো।’’
আলোচনায় রয়েছেন বর্তমান কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লিটন শেখ। এই নেতা জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও নড়াইল পৌরসভার সাবেক মেয়র জুলফিকার আলীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। নিজ কর্মীদের চাঙ্গা করতে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা, চা-চক্র, ঘরোয়া বৈঠকসহ বিভিন্ন কার্যক্রমে সক্রিয় থাকার চেষ্টা করছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘অতীতের সব আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছি। এবার আমি দলের নেতৃত্বে আসলে বিগত দিনে নড়াইলে যা হয়নি, এবার তা করে দেখাবো। আমার ডাকে দলে শত-শত নতুন কর্মী যোগদান করবে।’’
সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন যথাক্রমে বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি মামুন গাজী ও ভিক্টোরিয়া কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক আরিফ হাসান। তারা দু’জনই জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার রিজভী জর্জের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। গেল বছরের ৭ ডিসেম্বর ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশের সাথে সংঘর্ষকালে গ্রেফতার হয়ে কারাভোগ করেন আরিফ হাসান। তিনি বলেন, ‘‘আমি জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনীত হলে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার অন্দোলনে রাজপথে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে সর্বোচ্চ ভূমিকা পালন করবো।’’
এছাড়াও শীর্ষ দুই পদের জন্য আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন বর্তমান কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কালিয়া উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক স.ম রকিবুজ্জামান পাপ্পু, কালিয়া উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব তরিকুল ইসলাম ও জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মোঃ রুমেল হোসেন কবির। তারা প্রত্যেকে জেলা বিএনপির সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন বিশ্বাসের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত।
নতুন কমিটিতে কারা নেতৃত্বে আসতে পারে এ বিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ বলেন, ‘‘এ মাসের শেষদিকেই আশা করছি আমরা নড়াইল জেলা ছাত্রদলের নতুন কমিটি গঠন করবো। এক্ষেত্রে অতীতে রাজপথের আন্দোলনে যাদের ত্যাগ-তিতিক্ষা বেশি ছিল এবং তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মাঝে যাদের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে এমনদেরই দলের শীর্ষ নেতৃত্বে আনা হবে।’’