কালিয়ায় ভূয়া মাদ্রাসা শিক্ষকের হয়রানির শিকার ৫ পরীক্ষার্থীসহ অভিভাবক

0
97
কালিয়া
কালিয়া, নড়াইল ম্যাপ

স্টাফ রিপোর্টার

নড়াইলের কালিয়ায় ভূয়া মাদ্রাসা শিক্ষক মো.মতিউর রহমান রাজ ওরফে শামীম রেজার রোষানলে পড়ে পাঁচ শিক্ষার্থীসহ অবিভাবকদের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করে হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। শামীম রেজা উপজেলার কলাবাড়িয়া গ্রামের মৃত আ.ছাত্তার মোল্যার ছেলে। মাদ্রাসা শিক্ষক না হয়েও সে নিজেকে কালিয়া আলিম মাদ্রাসার শিক্ষক পরিচয় দিয়ে ওইসব শিক্ষার্থীসহ তাদের অভিভাবকের নামে একের পর এক মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তার অত্যাচার থেকে রক্ষা পেতে ১৪জন গ্রামবাসি কালিয়ার ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

সরেজমিনে ভূক্তভোগীদের অভিযোগে জানা যায়, শমীম রেজা একজন মাদ্রাসা শিক্ষক হিসাবে ভূয়া পরিচয় দিয়ে মানুষকে প্রতারিত করে আসছেন। পরিচিত বা অপরিচিত মানুষকে চলার পথে রাস্তা-ঘাটে থুথু (ছ্যাপ) ফেলতে দেখলে শামীম তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করাসহ মারধর পর্যন্ত করেন তিনি। তেমনই থুথু ফেলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ২৫ মে দুপুরে দীপু তালুকদার ও আবু তাহের মোল্যা নামের কলাবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দুই এসএসসি পরীক্ষার্থীকে শামীম রাস্তায় ফেলে মারধর করে। এই ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে শামীম নিজের অপকর্ম ঢাকতে নিজেকে কালিয়া আলিম মাদ্রাসার শিক্ষক হিসাবে ভূয়া পরিচয় দেন। তিনি কলাবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষর্থী এস এম সামিউল হক, মো.জোহায়ের অনিক, দীপু তালুকদার, আব্দুল্লাহ মীর ও কলেজ শিক্ষার্থী এস এম ইজাজ উল হকসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে গত ৩০ মে উপজেলার নড়াগাতি থানায় একটি মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগটি তদন্তে মিথ্যা প্রমানিত হলে তদন্তকারি কর্মকর্তা এস আই মো.জাকির হোসেন গত ৬ জুন উপজেলার নড়াগাতি থানায় ১৯৫ নম্বর একটি জিডি করেন। তারপরও শামীম গত ২৩ জুলাই মাদ্রাসা শিক্ষক হিসাবে ভূয়া পরিচয় দিয়ে নাম ভাঙ্গিয়ে একই দিনের ঘটনার উল্লেখ করে ওইসব পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে আমলী আদালত নড়াগাতি, নড়াইলে এমপি ৫৭/২৩ একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন। আদালত মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য সিআইডি নড়াইল জেলা শাখার ওপর ন্যস্ত করেছেন। থুথু ফেলাকে কেন্দ্র করে শামীম রেজার অত্যাচারের বহু ঘটনার প্রমান রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

পরীক্ষার্থী দিপু তালুকদারসহ ভুক্তভোগী ওইসব পরীক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, আমরা স্কুল থেকে আসার পথে অজানা অবস্থায় রাস্তার পাশে থুথু ফেললে শামীম রেজা তাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং আমাদের দুজনকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল দেয়াসহ মারধর করেন।

কলাবাড়িয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো.নূরুল ইসলাম লুলু বলেন, থুথু ফেলতে দেখলে শামীম ক্ষিপ্ত হয়ে যখন তখন যাকে তাকে মারধর করে। নিরাপরাধ মানুষের নামে আদালতে বা থানা পুলিশে মিথ্যা মামলাসহ অভিযোগ দিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ মানুষকে হয়রানি করে আসছে শামীম।

কলাবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. হাসমত তালুকদার বলেন, নিজের অপকর্ম ঢাকতে ছাত্র,অভিভাবক ও ব্যবসায়ীসহ নিরীহ মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন।

মো.মতিউর রহমান রাজ ওরফে শামীম রেজা বলেন,আমি কালিয়া আলিম মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলাম। শিক্ষার্থীরা আমাকে দেখলে অকারণে আমার সামনে থুথু ফেলে। এ বিষয়টি আমি অভিভাবককে জানাই। তাদের বিরুদ্ধে তাঁরা কোন ব্যবস্থা না নেননি। বিধায় আমি মামলা ও বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ করেছি।

কালিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো.দবির উদ্দিন বলেন,মো.মতিউর রহমান রাজ ওরফে শামীম রেজা নামে আমার মাদ্রাসায় কোন শিক্ষক অতীতেও ছিলনা বর্তমানেও কর্মরত নেই। কালিয়ার ইউএনও রুনুসাহা বলেন, একটি অভিযোগটি পেয়েছি। বিষয়টিতে খোঁজ-খবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।