স্টাফ রিপোর্টার
নড়াইলের কালিয়ায় মুক্তিযোদ্ধার বসতভিটা দখল করতে সন্ত্রাসী হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক নারী পাচারকারী দলের সক্রিয় সদস্য শাকিল হোসেনের নেতৃত্বে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহলের প্রত্যক্ষ ইন্ধনে মো.আনোয়ার হোসেন নামে এক মুক্তিযোদ্ধার বসতবাড়ির জমি জোরপূর্বক দখল করতে সশস্ত্র সন্ত্রাসী হামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওই মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের। এতে ওই মুক্তিযোদ্ধার গর্ভবতী নাতনী খাদিজা ইসলাম (১৬) ও তাঁর ভাই হুসাইন মোল্যা গুরুতর আহত হয়। আহতরা খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। উপজেলার চাঁচুড়ী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে শুক্রবার বিকালে কালিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার চাঁচুড়ী মৌজার ৮১২ ও ১৬০ খতিয়ানের পৈত্রিক জমিতে বসবাস ও ভোগদখল করে আসছিল বীর মুক্তিযোদ্ধা মো.আনোয়ার হোসেন। তিনি ২০০৭ সালে মারা যাবার পর স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী দুর্বৃত্ত বাহিনীর মদদে তাঁর শরীকদের নজর পড়ে এসব জমির ওপর। রাজাকার পরিবারের সন্তান ও সাবেক এক প্রভাবশালী বিএনপি নেতা বর্তমানে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের ছত্রছায়ায় স্থানীয় শাকিল হোসেন নামে আন্তর্জাতিক নারী পাচারকারী দলের সক্রিয় এক সদস্যের নেতৃত্বে অতিসম্প্রতি জোরপূর্বক বসতভিটার একাংশ দখল চেষ্টা চালায়। এরপরই মুক্তিযোদ্ধা পরিবার এডিএম আদালতের শরণাপন্ন হয়ে নিষেধাজ্ঞা নেয়। কিন্তু আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও দখলদাররা জমির ওপর অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করছেন। এরপর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যরা বাধা দিলে অস্ত্র হাতে তাদের হত্যার হুমকি দেয় দখলদাররা। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) সকালে শাকিল হোসেনের নেতৃত্বে রজিবুল ইসলাম (রাজিব),রাতুল মোল্যা,মমিনুল ইসলাম (সাগর) ও আল আমিন ওরফে মিহিন মোল্যাসহ একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের চলমান মামলার নালিশী জমিতে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ধারালো রাম দা, সামুরাই, চাপাতি, চাইনিজ কুড়াল, লোহার রড ও হাতুড়ীসহ দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে জোরপূর্বক দখল করতে যায়। এ সময় প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে রেক্সনা বেগম নিষেধ করলে তাদের ওপর আক্রমণ করে দখলদাররা। এরপর রজিবুল ইসলাম (রাজিব) খুন করার উদ্দেশ্যে মুক্তিযোদ্ধার চাচাতো ভাই মো.হুসাইন মোল্যার মাথায় কুপিয়ে মারাত্মক আহত করে। এছাড়া শাকিল হোসেনসহ দখলদাররা প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধার নাতনী গর্ভবতী খাদিজা ইসলামকে হত্যার উদ্দেশ্যে তলপেটে বেদম প্রহার করলে লোমহর্ষক নির্যাতনে খাদিজা ইসলামের পেটের বাচ্চা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় পড়ে থাকে। এলাকাবাসী গুরুতর আহতদেরকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির করে। এতে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের লোকজন চরম শঙ্কার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। দুর্বৃত্ত বাহিনীর দখল ও নির্যাতন থেকে রেহায় পেতে প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা কামনা করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার।
এ ব্যাপারে কালিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ তাসমীম আলম বলেন,‘ লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তপূর্বক পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।’